অগ্নিপথ-এর (Agneepath scheme) বিরোধিতায় অগ্নিগর্ভ 🔥 বিহার – ভারতের অগ্নিপরীক্ষা !! অগ্নিপথ প্রকল্পের মাধ্যমে ভারতের স্থল , জল ও বায়ুসেনার নিয়োগের নতুন নির্দেশনা প্রকাশ পেতেই দিকে দিকে বিক্ষোভ প্রকাশ পায় সাধারণ মানুষের। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে এই ঘোষণা করা হয়। এই প্রকল্প অনেকেই সাধুবাদ জানিয়েছে আবার অনেকে এর তীব্র নিন্দা করেছেন।
অগ্নিপথ প্রকল্প-র (Agneepath scheme) নিয়োগের মাধ্যমে ভারতে বেকারত্বের বেশ কিছুটা সুরাহা হলেও সরকারি চাকরিতে যে স্থায়িত্ব ও নিরাপত্তা মানুষ আশা করেন -তার প্রবল অভাব দেখা যাচ্ছে। তবে বিভিন্ন সমালোচনার মধ্যে একটা কথা বলতেই হচ্ছে যে এই নিয়োগ চুক্তিভিত্তিক সেনাবাহিনী-র হাতে দেশের নিরাপত্তা তুলে দিচ্ছে। তার কুফল বা সুফল কি হতে পারে তা পাঠকরাই নির্ধারণ করবেন।
এই অগ্নিপথ প্রকল্প-র বিরোধিতায় আজ বৃহস্পতিবার সারা দেশে মূলতঃ বিহার-এ ব্যাপক বিক্ষোভ দেখায় একদল মানুষ। সরকারি বিভিন্ন সম্পদের বিপুল ক্ষয় ক্ষতি করতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা। বিহার অগ্নিপথের আগুনে অগ্নিদগ্ধ। আসুন, বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক অগ্নিপথ প্রকল্প কি , অগ্নিপথ প্রকল্প-র সুফল বা কুফল কি।
অগ্নিপথ প্রকল্প কি ? What is Agneepath Scheme (Agneepath Recruitment)
অগ্নিপথ প্রকল্প (Agneepath Scheme) আসলে সেনাবাহিনীর স্থল , জল ও নৌবাহিনীতে বিপুল পরিমাণ জওয়ান নিয়োগের একটি পদ্ধতি। এই প্রকল্পের ঘোষণা প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফ থেকে মঙ্গলবার জানানো হয়। অগ্নিপথ প্রকল্প কি তা জানবার জন্য এই প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলি জানা দরকার। অগ্নিপথ প্রকল্প-র (Agneepath Scheme) উল্লেখযোগ্য পয়েন্টগুলি নিচে তুলে ধরা হলো।
- এই প্রকল্পের মাধ্যমে যাদের নিয়োগ করা হবে তাদের বয়স হতে হবে সাড়ে সতেরো থেকে একুশ বছরের মধ্যে।
- এই প্রকল্পের মাধ্যমে যাঁদের সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করা হবে তাঁরা অগ্নিবীর হিসেবে সেনাবাহিনীতে পরিচিতি পাবেন।
- প্রতি বছর বিভিন্ন রেজিমেন্টে শূন্যপদ দেখে তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কিপরিমাণ নিয়োগ করা হবে।
- প্রথম বছর নিয়োগ হবে 40000 ক্যান্ডিডেট। প্রথম তিন বছর এই অগ্নিবীর-রা পাবেন মাসে 30000 টাকা। চতুর্থ বছর সেই মাসিক বেতন দাঁড়াবে 40000 টাকায়।
- অগ্নিপথ প্রকল্প-র অগ্নিবীর-রা তাঁদের আয়ের ৩০ % জমাতেও পারবেন।
- ৪ বছরের মেয়াদ শেষে এই প্রকল্পে নিযুক্তদের মধ্যে ২৫ % উচ্চ-প্রশিক্ষণ প্রাপ্তদের স্থায়ীভাবে নিয়োগ করা হবে সেনাবাহিনীতে।
- বাকি ৭৫ % কর্মীদের আর সেনাবাহিনীতে রাখা হবে না , এককালীন করমুক্ত ১০-১১ লক্ষ্য টাকা নিয়ে তাঁরা ছুটি পাবেন। এই অবসরের সময় তাঁরা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সার্টিফিকেট ও পাবেন।
অগ্নিপথ প্রকল্প-র (Agneepath Scheme) অনেক সুবিধা রয়েছে। এছাড়া এই প্রকল্পে নিয়োগ, স্থায়ী নিয়োগের তুলনায় অনেক সহজ হবে। তাই খুব দ্রুত সেনাবাহিনীতে জওয়ানদের ঘাটতি পূরণ হবে উপরন্তু, তুলনামূলক কম খরচে দেশে বেকার সমস্যার সমাধানও হবে।
অগ্নিপথ প্রকল্প-র (Agneepath Scheme) সমালোচনামূলক দিকগুলি কি ? কেনো অগ্নিপথ প্রকল্প-র বিরোধিতায় এত বিক্ষোভ ? Reason of Agneepath Strike
অগ্নিপথ প্রকল্প-র অবসরপ্রাপ্ত জওয়ানরা কোনো গ্রাচুইটি বা পেনশন পাবেন না। তাঁরা নিজেদের অবসরপ্রাপ্ত জওয়ান বা Ex-army বলেও পরিচয় দিতে পারবেন না।
তবে, কর্মরত অবস্থায় যদি তিনি শহীদ হন বা তাঁর অঙ্গ-হানি হয় তাহলে আর্থিক সাহায্য পাবেন।
অগ্নিপথ প্রকল্প-র (Agneepath Scheme) বিরোধিতায় (Agneepath Strike) আজ দেশের বিভিন্ন জায়গায় চাকরিপ্রার্থী যুবক বা ছাত্ররা তাঁদের বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। মূলত বিহারে এই বিরোধ সব থেকে প্রবল।
চাকরিপ্রার্থী ছাত্রদের মতে দু-বছর আগে তারা সেনাবাহিনীতে ভর্তির পরীক্ষা দিয়েছে , এখন এই প্রকল্পের কারণে তাঁদের ভর্তি আটকে রয়েছে – জনৈক ছাত্রের মতামত।
সেনাবাহিনীর অফিসারদের মধ্যেও এই প্রকল্পের নিয়োগের বিষয়ে দ্বিমত দেখা যাচ্ছে। সূত্রের খবর অনুযায়ী বিভিন্ন মহলে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠছে। যেমন : চার বছর পর এই অবসরপ্রাপ্ত জওয়ানরা কি করবেন ? তাঁরা আবার বেকার বা রোজগার বিহীন হয়ে পড়বেন। তখন তাঁরা নিজেদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য হয়তো দুষ্কৃতীমূলক কাজে লিপ্ত হতেও পারেন। আবার।, অনেকে প্রশ্ন করছেন যে , এই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ফলে এই সেনাবাহিনী কি লড়াই করার জন্য যথেষ্ট মনোবল পাবেন ?
একাধিক প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছে অগ্নিপথ প্রকল্প (Agneepath Scheme)।